বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর পাচ্ছে ৫০১ একর জমি

Passenger Voice    |    ০৪:১৭ পিএম, ২০২৪-০৫-০৪


বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য চট্টগ্রাম বন্দর পাচ্ছে ৫০১ একর জমি

চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য প্রায় ৫০১ একর খাসজমি পাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন এই জমি বরাদ্দ দেবে।

এর আগে ২০১৭ সালে ব্যক্তিমালিকানাধীন ৬৭ একর জমি অধিগ্রহণ করে বন্দরকে দেয় জেলা প্রশাসন। নতুন বরাদ্দ পেলে মোট জমির পরিমাণ দাঁড়াবে ৫৬৮ একর।

তবে প্রকল্পের জন্য আরও ৩০২ একর জমি দরকার।

চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পাঠানো তিনটি চিঠি বৃহস্পতিবার (২ মে) বন্দর কর্তৃপক্ষ পেয়েছে। এতে বলা হয়েছে, প্রায় ৫০১ একর খাসজমি বরাদ্দ পেতে ৩ কোটি ৩ টাকা সেলামি মূল্য জমা দিতে হবে।

জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, বন্দর কর্তৃপক্ষ নির্ধারিত টাকা জমা দেওয়ার পর ভূমি মন্ত্রণালয়ের পক্ষে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বন্দোবস্ত দলিল স্বাক্ষর হবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব ওমর ফারুক জানান, জমি বন্দোবস্তের জন্য টাকা জমা দেওয়া হবে। এছাড়া প্রায় ৩০০ একর জমি বরাদ্দ পেতে প্রক্রিয়া চলছে।

সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের (চবক) চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহেল জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় বে টার্মিনাল প্রকল্পে সরাসরি ৮০০ কোটি ডলারের বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) আসতে পারে। বে টার্মিনাল প্রকল্পের দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল, একটি মাল্টিপারপাস টার্মিনাল এবং একটি তেল ও গ্যাস টার্মিনাল সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে।

চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল থেকে বঙ্গোপসাগরের রাসমণিঘাট পর্যন্ত প্রায় ৬ কিলোমিটার জমির ওপর বে টার্মিনাল তৈরির প্রস্তাব করা হয়েছে। আবুধাবি পোর্টস গ্রুপের সঙ্গে চবকের যৌথ উদ্যোগে বহুমুখী টার্মিনালটি তৈরি করা হবে। আবুধাবি পোর্টস গ্রুপ বহুমুখী টার্মিনাল তৈরির জন্য এক বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে এবং বন্দর কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে।

সরকার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) মডেলে বে টার্মিনালের দুটি কন্টেইনার টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য সিঙ্গাপুরের পিএসএ এবং আরব আমিরাতের ডিপি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। পিএসএ সিঙ্গাপুর ও ডিপি ওয়ার্ল্ড প্রত্যেকে ১৫০ কোটি ডলার করে বিনিয়োগের প্রস্তাব দিয়েছে বলে জানান চবক চেয়ারম্যান।

তেল-গ্যাস টার্মিনালের জন্য সাড়ে তিন বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, স্থানীয় ইস্ট কোস্ট গ্রুপ ও কয়েকটি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে এটি তৈরি করবে। টার্মিনাল তৈরির পর দেশের জ্বালানি ধারণক্ষমতা ২৫ দিন থেকে বেড়ে দুই মাস পর্যন্ত বাড়বে। বে টার্মিনালের জন্য অ্যাক্সেস চ্যানেল ড্রেজিং ও ব্রেকওয়াটার তৈরির জন্য বিশ্বব্যাংক ৫৯০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। মাস্টারপ্ল্যান তৈরি হয়েছে। জমি অধিগ্রহণের পাশাপাশি নকশার কাজও শেষ হওয়ার পথে। এখন বে টার্মিনালের কাজের গুণগত মান ও খরচ প্রাক্কলন প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ব্যবসায়ীরা বে টার্মিনাল প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানিয়ে আসছেন। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে ২৪ ঘণ্টা বড় জাহাজ ভিড়ানো যাবে। কনটেইনার ও পণ্য খালাস করে দেশের বিভিন্ন স্থানে নেওয়া যাবে। এতে বন্দর ব্যবহারের খরচও কমবে বলে দাবি তাদের।

প্যা.ভ/ত